তাঁকে চেনে না, এমন মানুষ হয়তো পাওয়া যাবে না। আবার তাঁকে ঘিরে অজানারও কোনো শেষ নেই।
তাঁর ডাক নাম শামীম। আর সার্টিফিকেট নাম মোশাররফ হোসেন। বাবার নাম আব্দুল করিম।
বাবা মঞ্চে অভিনয় করতেন। কিন্তু তাঁর অভিনয় দেখার সৌভাগ্য হয়ে উঠেনি ছেলের। তাঁর আবৃত্তি শুনেছেন? দারুণ দরাজ গলা ছিল তাঁর বাবার।
আরো পড়ুন
- পুরস্কার নেবেন না ঠিক আছে, কিন্তু এমন আত্মঘাতী কথা কেন মোশাররফ ভাই?
- মেহজাবিন: অপ্রতিদ্বন্দ্বী না গতানুগতিক?
- তবুও সবাই তাঁর ভক্ত
- দ্য কিউরিয়াস কেস অব শাহেদ
- বিস্ময়কর আবির্ভাব থেকে প্রতিভার অপচয়
যখন পুরোপুরি অভিনয় শুরু করেন, তখন মনে হয়েছিল বাবার কিছু একটা তাঁর সঙ্গে থাকুক। এই ভাবনা থেকেই তাঁর নামের একটা অংশ নিজের নামের সঙ্গে লাগিয়ে নেন। হয়ে যান মোশাররফ করিম।
যে সময় ‘ক্যারাম’ করার প্রস্তাব পেলেন ঠিক সে সময়ই মোশাররফের আরেক নাটকের কাজে যাওয়ার কথা ব্যাংকক।
তিনি হয়তো ব্যাংককই যেতেন। কিন্তু তাঁকে তাজ্জব বানিয়ে ক্যারাম করার জন্যই পীড়াপীড়ি শুরু করলেন স্ত্রী রোবেনা রেজা জুঁই।
মোশাররফ স্ত্রীর কথায় রাজি হলেন। আর এই ক্যারামই বদলে দিল মোশাররফ করিম নামের এক প্রায় চালচুলোহীন অভিনেতার জীবন।
স্রেফ একটা এক ঘণ্টার নাটক কীভাবে একজন অভিনেতার জীবন পাল্টে দিতে পারে তাঁর ভালো উদাহরণ ক্যারাম। সুযোগটা পুরোপুরি কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন তিনি।
ভেবেছিলেন এটাই শেষ বল। হয় ছক্কা নয় অক্কা। সম্ভবত সেখানেই তিনি ছক্কা হাঁকালেন!
নাটকের জগৎটা বাংলাদেশের অনেক আগেই বদলে গেছে। সেই বদলে যাওয়া জগতে যে কয়জন স্রেফ অভিনয় প্রতিভা ও পরিশ্রমের জোরে টিকে আছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন মোশাররফ করিম। তিনি এখন এমন একটা জায়গায় নিজেকে উঠিয়েছেন, যেখানে তাঁর একক রাজত্ব।
অনেক আলোচিত যেমন তিনি, তেমনি সমালোচনাও অন্ত নেই। একই রকম স্ক্রিপ্টে বারবার কাজ করেন বলে নিন্দুকেরা দাবী করেন। তবে, এই সমালোচনার পরও তিনি সেরা। তাঁর প্রতি প্রত্যাশার চাপ বেশি বলেই সমালোচনাটা তাঁর ওপর দিয়েই বেশি যায়।
তাঁর ভক্তের শেষ নেই, আবার সমালোচকেরও কমতি নেই। তাকে দর্শকদের কেউ পছন্দ করে, কেউ বা একদমই করে না। কিন্তু, তাঁকে এখন আর কেউই এড়াতে পারে না। তিনি আজকের দিনের বাংলা নাটকের অনন্য এক ব্র্যান্ড।