শুরুটা হয়েছিলো ২০১০ সালের ‘বিট্টু শর্মা’ দিয়ে। যশ রাজ ব্যানারে মুক্তি পাওয়া ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’ সিনেমায় অভিনয় করার মধ্য দিয়ে আসেন তিনি। জীবনের প্রথম সিনেমায় অভিনয় কি বা কতটুকু করেছিলেন তার উত্তর হয়তো ঐ বছরই ফিল্মফেয়ারের মঞ্চে পাওয়া যায়। সেরা নবাগত অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছিলেন।
তার চেয়ে বড় পুরস্কার হয়তো দিয়েছিলেন শাহরুখ খান। ফিল্মফেয়ার নেয়ার জন্য স্টেজে ওঠার পর, পুরস্কার দেয়ার সময় শাহরুখ বলেছিলেন – ‘তার পর আউটসাইডার হিসেবে বলিউডে রাজত্ব করবে রণবীর সিং।’ পাকা জহুরীর মতো হয়তো তখনই চিনে নিতে ভুল হয়নি শাহরুখের, কিন্তু ভুল হয়েছিলো আমাদের।
আসলে ভুল হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না। কারণ প্রথম সিনেমায় ফিল্মফেয়ার পাওয়ার পর যদি দ্বিতীয় সিনেমার জন্য বেছে নেন ‘লেডিস ভার্সেস রিকি ব্যাল’ তাহলে দর্শকদের ভুল বোঝাটা সঠিক। যদিও তিন নম্বর সিনেমায় দুর্দান্ত রুপে ফিরে আসছিলেন।
সত্যি বলতে ‘লুটেরা’ সিনেমায় করা ‘বরুন শ্রীবাস্তব/নন্দু ত্রিপাঠি’ চরিত্র দিয়ে তখনই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি বলিউডে উড়ে এসে জুড়ে বসা কেউ না। তিনি থাকতেই এসেছেন। না হলে কিভাবে সঞ্জয় লীলা বানসালি তার ‘রাম-লীলা’ সিনেমায় এই ছেলেকে কাস্ট করান!
আজকের সুপারস্টার আলি আব্বাস জাফরের পরিচালনায় ‘গুন্ডে’ সিনেমায় করা ‘বিক্রম বোস’ চরিত্র। এটা ছিলো আলি আব্বাসের দ্বিতীয় সিনেমা। কিন্তু আরেক আলি (সাদ আলি) পরিচালিত ‘কিল দিল’ সিনেমায় আবারো সেই ভুল! ভুল হলেও শোধরাতে সময় নেন নাই।
জোয়া আখতারের সিনেমায় ‘প্রিয়াঙ্কা চোপড়া’র ভাই এর চরিত্র করাটা সাহসের। এক ছবি আগে যার বিপরীতে অভিনয় করেছেন এখন তার ভাই এর চরিত্র করা বলিউড হিসেবে সাহসিকতার। ‘জোশ’ সিনেমায় যা করেছিলেন শাহরুখ খান।
এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। বলতে গেলে এর পরই সব পেয়েছেন জীবনে। রনভীর সিং কে বলিউডে ট্রেড মার্ক করে দিয়েছেন ‘সঞ্জয় লীলা বানসালি’। একে একে করেছেন ‘পেশওয়া বাজিরাও’ কিংবা ‘আলাউদ্দিন খিলজী’র অতিমানবীয় এনার্জেটিক পার্ফরমেন্স। মাঝে অবশ্য অনুরোধে ঢেঁকি গেলার মতো ‘বেফিকরে’ করেছিলেন।
এক বছরের মধ্যে ‘পদ্মাবত’ এর আলাউদ্দিন খিলজী, ফুল কমার্শিয়াল ‘সিম্বা’ তে ‘সংগ্রাম ভালে রাও’ কিংবা স্বপ্নের পেছনে নতুন করে দৌড়াতে শেখানো ‘মুরাদ আহমেদ’ এর চরিত্র করা চাট্টিখানি কথা না। ৯ বছর আগে যখন শাহরুখ যা বলেছিলেন, এখন তার প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি।
শুধু যে সিনেমায় অভিনয় করেছেন তা কিন্তু না। একটা প্রথম সারির নায়িকা কে ডিপ্রেশন থেকে ফিরিয়ে এনেছেন, ভালোবেসেছেন, বিয়েও করেছেন (যা বলিউডে করা আর স্পেস স্যুট ছাড়া স্পেসে যাওয়ার মতো)। এইতো কিছুদিন আগে একটা অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের সঞ্চালক জিজ্ঞেস করেছিলো ‘আর কি চান আপনি?’
রণবীর উত্তর দিয়েছিলেন ‘আমার পাশে আছেন আমাকে রণবীর সিং নামের অভিনেতা বানানো সঞ্জয় লীলা বানসালি আর আমার জীবনের ভালোবাসা আমার সামনে বসে আছে। এখন যে আমার জীবনসঙ্গী। আমার আর কিছু চাওয়ার নাই’।

তাঁর হয়তো চাওয়ার না থাকতে পারে পরে দর্শকদের আছে। আর তা পূরণ করতে সামনে নিয়ে আসছেন ‘তাখত’ কিংবা ‘৮৩’ এর মতো সিনেমা নিয়ে।