হতাশা বড় খারাপ ব্যাপার। নিজে হতাশ হতে হতে ভাবলাম এই ব্যাপারটা নিয়ে একটু ঘাঁটা দরকার। আসলেই আমাদের এত হতাশা কেন?
আমার নিজের কাছে মনে হয়, আমরা মূলত এ হতাশ কারন আমরা আমাদের লক্ষ্য সম্পর্কে আমরা স্বচ্ছ অবস্থানে থাকিনা। আমরা মূলত তাই নিয়ে ব্যস্ত থাকি যা আমরা চাই। আমাদের লক্ষ্য, চাওয়া সবকিছু নির্দিষ্ট ব্যাক্তি কিংবা নির্দিষ্ট গণ্ডীতে সীমাবদ্ধ হয়ে থাকলে হতাশা আমাদের খুব সহজে গ্রাস করে।
ধরা যাক, ভালোবাসা। আমরা নির্দিষ্ট একজনের ভালোবাসা পেতে চাই। যেভাবেই হোক চাই। হতে পারে সে মা কিংবা বাবা। হতে পারে প্রিয় বন্ধু কিংবা প্রেমিক বা প্রেমিকা। আমরা একটা সময় এই নির্দিষ্ট ব্যক্তির ভালোবাসা পাওয়ার জন্য একরোখা স্বভাবের হয়ে যাবে।
হয়ত এই মানুষটা বাদে হাজারটা মানুষ আমাদের ভালোবাসছে কিন্তু তাতে দৃষ্টি দেয়ার মত মানসিকতা আমাদের ভেতরে জন্ম নেয় না। আর ঠিক এই সময়টাতে আমরা ধীরে ধীরে হতাশ হয়ে পড়ি।
বিভিন্ন মনোবৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী বলা যায় মানুষের হতাশার মূল কারণ তিনটি।
১. সম্পর্কগুলো এবং নিজস্ব সম্প্রদায়ের মাঝে আন্তরিক সম্পর্ক দিন দিন দুর্বল হয়ে যাওয়া।
হতে পারে পারিবারিক সম্পর্ক দৃঢ় নয় কিংবা প্রেমের সম্পর্কে সন্তুষ্ট নয়। হতে পারে নিজের আশে পাশের মানুষগুলোর সাথে সম্পর্ক দিনকে দিন অনলাইন বা অননেট ভিত্তিক হয়ে যাওয়া।
২. নিজের খ্যাতি, ভালো আর্থিক অবস্থান, ভাবমূর্তি নিয়ে অতিরিক্ত ব্যস্ত থাকা।
আমাকে অনেক টাকার মালিক হতেই হবে। আমাকে সবার কাছে যেভাবেই হোক ভালো হতেই হবে। আমাকে যেন সবাই এক নামে চিনে এমন কিছু করতেই হবে… এমন ধারণাগুলো মাথায় বারবার আনা।
৩. কোন ব্যাপারে খুব বেশি আশাবাদী হওয়া।
অনেক সময় আমরা ভেবে নেই আমরাই সঠিক। আমি যখন বলেছি হবে তো হবেই… এমন একটা ধারনা নিয়ে থাকা। অর্থাৎ নিজের স্বকীয়তাতে খুব বেশি জোর দেয়া।
এগুলোকে মূল কারণ হিসেবে ধরা যায়। তবে তার সাথে অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত প্রযুক্তিনির্ভরতা, ঘুমের অনিয়ম, সবুজের সংস্পর্শ থেকে দূরে সরে যাওয়া, নিজের অনুভূতিকে অবমূল্যায়ন করা, সব কাছে অলসতা ইত্যাদিও হতাশার কারণ হিসেবে দেখেন বিশেষজ্ঞরা।
জীবন অনেক সুন্দর। আপনার জীবন কেবল আপনার জন্য। আশেপাশের মানুষগুলোর জন্য। কেন স্বার্থপর হয়ে কেবল নিজেরটা ভাবছেন? এবার একটু অন্যদের নিয়ে ভাবুন, তাদের জন্য কিছু করুন। হতাশাকে কবর দিয়ে ফেলুন।