রায় ও তাঁর বিমলা

| শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা থেকে |

সত্যজিৎ রায়ের বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়ির বাইরের ঘরে স্টাডিতে দাঁড়িয়ে তাঁর বিমলা। কিন্তু সত্যজিতের ছবি ‘ঘরে বাইরে’র পর্দায় অপর্ণা সেন বিমলা নন। স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত বিমলা।

সত্যজিৎ রায়ের সাথে সুচিত্রা সেন

নাহ, এর বহু দশক আগেই সত্যজিৎ তাঁর বিমলা ভাবেন রবি ঠাকুর আত্মস্থ করে সুচিত্রা সেনকে। সেটা ওই পঞ্চাশের দশকে। কিন্তু সে ছবিতে সুচিত্রা-সত্যজিত রাজি হলেও, উত্তম কুমার করতে চাননি বিপ্লবী সন্দীপের চরিত্র। উত্তমের ঘনিষ্ঠমহল তাঁর কানভারি করে এই বলে যে সন্দীপ নাকি আদতে নেগেটিভ রোল।

নায়কের সেটে উত্তমকে শট বুঝিয়ে দিচ্ছেন সত্যজিৎ রায়।

এরপর মানিক বাবু সুপ্রিয়া মাধবী শর্মিলা শেষ অবধি অপর্ণা সেনকে বিমলা ভাবেন। কিন্তু, তাতেও ছবি ফাইনালাইজ হয়না।

এরপর বহু বছর পর আশির দশকে বিমলা হন রুদ্রপ্রসাদ পত্নী স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত। অনেকের প্রিয় তিনি বিমলা রূপে,অনেকের নয়। শর্মিলা তো বলে বসলেন, ‘শেষ অবধি তো দেখলাম মানিকদার পছন্দ ,কাকে বিমলা করলেন।’ ছবিটা ১৯৮৪ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে পাম ডি’অর-এর জন্য প্রতিযোগিতামূলক বিভাগে প্রদর্শিত হয়।

অপর্ণা চিরকালই সত্যজিতের বন্ধু কন্যা হওয়ায় বাড়তি রোল গুলো করতে ডাক পেতেন। তবু অপর্ণা বিমলা না করেও চুপ থাকলেন। তবে যথারীতি সন্দীপের চরিত্র করলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে ছিলেন ভিক্টর ব্যানার্জি।

আজ এতদিন পর অপর্ণার ‘ঘরে বাইরে আজ’ ছবি মুক্তি পেল। গুরুদক্ষিণা দিতে মাণিক কাকার ঘরে গেলেন শিষ্যা। অপর্ণার প্রথম ছবি করতে প্রেরণা দেন তো মানিক কাকাই।

বিমলা অপর্ণার করা হয়নি।

কিন্তু আজ সেই ছবি নতুন আঙ্গিকে করলেন অপর্ণা সেন। অপর্ণার বিমলা তুহিনা দাস।  আজ যেন কোথাও গিয়ে অপর্ণা নিজেই সত্যজিতের বিমলা এই ছবিতে।

সর্বশেষ