রূপাকে বরণ করে নিতে তনু এসে দাঁড়িয়েছে। তনুর মখে মুচকি হাসি। তাই দেখে রূপার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। ঝাড়ি দিয়ে বললো, ‘আমার উপর কত অমানসিক নির্যাতন করা হয়েছে আর তুমি হাসছো?
তনু হাসতে হাসতে বললো, ‘তোমার কপাল ভালো যে তুমি মরে বেঁচে গেছ! বেঁচে থাকলে বার বার মরতে! লজ্জায় মরতে! অপমানে মরতে! উঠতে বসতে মরতে!’
‘আমার খুনিদের শাস্তি হবে না?’
‘মনে হয় না। এখনো আমার খুনিদের হয়নি। আমি ছাড়াও এখানে আরো অনেকে আছেন। তাদের কারো খুনিরই কোন বিচার হয়নি।’
রূপা তাকিয়ে দেখে তনু একা না। তার পিছনে, তৃষা, সিমি, রুমি, মহিমা, পারভিন সহ আরো অনেকে দাঁড়িয়ে আছেন। তারা সবাই রূপার কথা শুনে হাসছে।
রূপা বিরক্ত হয়ে সবার দিকে তাকালো। তনু এগিয়ে এসে রূপার হাত ধরে বললো, ‘এই দেশে ধর্ষণের বিচার হয় না। নিয়ম নেই।’
রূপা রাগে ক্ষোভে চিৎকার করে বললো, ‘এভাবে কী একটা দেশ চলতে পারে?’
সিমি এবারে হাসতে হাসতে বললো, ‘কেন চলতে পারে না। দিব্যি তো চলে যাচ্ছে। আর ধর্ষণেও দেশ এগিয়ে যাচ্ছে!’
রূপা অবাক হয়ে জানতে চাইলো, ‘ধর্ষণে একটা দেশ কিভাবে এগিয়ে যায়?’
তনু হাসতে হাসতে বললো, ‘এই আমাকেই দেখো, জঙ্গলে ধর্ষিত হয়েছি। আর তুমি হয়েছো চলন্ত বাসে! এটা কি এগিয়ে যাওয়া হলো না?’
তৃষা হাসতে হাসতে বললো, ‘দেশ যেভাবে ধর্ষণে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে কদিন পর, চলন্ত বিমানে ধর্ষণ হবে! দিন দিন ধর্ষণ উপরের দিকেই উঠবে!
‘আচ্ছা আমরা কিছু করতে পারি না?’
তনু হাসতে হাসতে বললো, ‘যারা বেঁচে আছে তারাই কিছু করতে পারছে না অার আমরা মরে কি বা করতে পারি বলো?’
‘সত্যিই কিছুই কী করার নেই?’
‘একটা উপায় আছে! তোমার মত আর যারা যারা আসবে আমরা তাদের বরণ করে নিতে পারি! এছাড়া আর কিছুই পারি না!’