আপনি সাঁতার জানেন? – কিছুটা অস্পষ্ট গলায় ছেলেটি জিজ্ঞেস করলো।
মেয়েটি প্রায় সাথে সাথেই জবাব দিলো – না। মেয়েটি যেন এই প্রশ্নের অপেক্ষাতেই ছিলো। না বলে খানিক চুপ থেকেই আবার বললো, জানেন ৫ লিটার খালি কন্টেইনার পানিতে ভাসিয়ে দিয়ে যারা সাঁতার জানেনা তারাও সাঁতার কাটতে পারে!
– জ্বী জানি। আমি ছোটবেলায় এভাবেই শিখেছি। তবে পাশে কাউকে থাকতে হয়। পানির চাপে আর ভয়ে অনেক সময় কন্টেইনার ছুটে যায়। তাই নির্ভরতা দিতে কাউকে পাশে রাখতে হয়। ঠিক জীবনের মতো।
মেয়েটির কি জানি হলো, মাথা নুয়ে আস্তে আস্তে জবাব বললো – আমি পানিতে আর সাঁতার শিখতে পারবো কিনা জানিনা। তবে জীবনের পানিতে সাঁতার কাটতে চাই। ডুবতে চাইনা। চাই, চাপে আর ভয়ে আমার কন্টেইনার ছুটে গেলেও কেউ একজন নির্ভরতা হয়ে পাশে থাকুক। ডুবে যাওয়ার আগেই কাঁধ বাড়িয়ে আমার ভর সয়ে নিক।
ছেলেটি ভাবলেশহীন গলায় একটু শব্দ করলো – হুম।
মেয়েটি হুট করেই উত্তেজিত গলায় জিজ্ঞেস করলো-আপনি থাকবেন?
ছেলেটি ফিক করে হেসে দিলো।
– হাসলেন যে!
ছেলেটি ভ্রুকুটি করে জানতে চাইলো -আপনার ওজন কত?
অবাক গলায় মেয়েটি পাল্টা প্রশ্ন করলো – কেন?
– আরেহ বলুন তো।
– উম অনেকদিন মাপিনি। হবে ৫৫/৫৬!
ছেলেটি ঠোঁটের কোনে একটা বাঁকা হাসি দিয়ে ধীরে ধীরে বললো – বাপরে! আমার কাঁধ এত শক্ত না। আপনার এত ওজনের ভার সইতে পারবো কিনা জানিনা।
মেয়েটি কোনো কথা বললো না। ছেলেটিও না। তারপর অনেকটা সময় চুপ করে মেয়েটার চোখে চোখ রেখে স্পষ্ট গলায় বললো, ভার সইতে পারবো কিনা জানিনা, তবে এটা জানি আমি নিজে ডুবে গেলেও আপনাকে ডুবতে দেবো না।
তারা কেউই ডুবতে চায়নি, অথচ তারা জানলোনা মনের অজান্তেই তাদের বুকের জমানো থৈ থৈ উপচে পরা ভালোবাসার সাগরে ধীরে ধীরে ডুবে গেলো অনন্ত সময়ের জন্য।